ডিসেম্বরে, বৃষ্টি হয়েছে ,৫ গুণ, এ মাসে, তিনটি শৈত্যপ্রবাহের, আভাস,

এবারের শীতকাল শুরু থেকে ব্যতিক্রমী আচরণ করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শীতকাল শুরু হয়। এ মাসে দেশে অন্যান্য বছরের তুলনায় বৃষ্টি প্রায় ৮০ শতাংশ কম হয়েছে। ফলে আবহাওয়া ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে শুষ্ক। ডিসেম্বরে ঠিক তার উল্টো চক্র দেখা গেল। এ মাসে সারা দেশে গড়পড়তায় ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু এবার হলো তার চেয়ে ৫ গুণের বেশি। শৈত্যপ্রবাহ হওয়ার কথা ছিল দুই থেকে চারটি। হয়েছে মাত্র একটি। তবে চলতি জানুয়ারি মাসে অন্যান্য বছরের মতোই বেশ শীত থাকবে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।

 

জানুয়ারির জন্য দেওয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, দেশে একটি কুয়াশাবলয় প্রবেশ করেছে। এ কারণে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে সারা দেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে। আর মঙ্গলবার দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণ–পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। দুই থেকে চার দিন ওই শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। আর মাসের মাঝামাঝি সময়ে আরেকটিসহ চলতি মাসে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। এর মধ্যে একটি শৈত্যপ্রবাহ তীব্র রূপ নিতে পারে। অর্থাৎ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যেতে পারে।
রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় কুয়াশা বেড়ে যাওয়ায় বাতাসে জলীয়বাষ্প বেড়ে গেছে। যে কারণে বায়ুতে বেশি মাত্রায় অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ভেসে বেড়াতে পারছে। দূষিত ওই বস্তুকণার কারণে বায়ুর মানও দ্রুত খারাপ হচ্ছে।

 

রোববার দিনের বেশির ভাগ সময় রাজধানীর বায়ুর মান খুবই অস্বাস্থ্যকর ছিল। বিশ্বের বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী বিশ্বের প্রধান শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা বায়ুদূষণের দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ তিনটি শহরের মধ্যে ছিল। রোববার সন্ধ্যা সাতটায় দূষিত বায়ুর দিক থেকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় ছিল আরব আমিরাতের দুবাই, এরপর ভারতের দিল্লি এবং তারপর ঢাকা।

 

এ বিষয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মূলত সাগরে বেশি নিম্নচাপ তৈরি হওয়ায় গেল ডিসেম্বরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে শৈত্যপ্রবাহ ও শীত কম পড়েছে। তবে চলতি জানুয়ারিতে অন্যান্যবারের মতো শীত পড়ার সম্ভাবনা আছে।

এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ বলছে, ডিসেম্বর মাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। সে কারণে ওই মাসে অন্যান্য বছরের তুলনায় শীত কম ছিল। বিশেষ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশালের মতো বড় শহরগুলোতে শীত এবার আরও কম ছিল।

উত্তরাঞ্চল, মৌলভীবাজার ও যশোর–চুয়াডাঙ্গা ছাড়া কোথাও শৈত্যপ্রবাহের তাপমাত্রা পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামেনি।

রোববার দেশের সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা কমে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত দেশের বেশির ভাগ এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী কুয়াশা থাকতে পারে।