আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে।
তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩ লক্ষ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট।অন্য দিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী . শাহাদাত হোসেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী ধানের শীষ মার্কা নিয়ে পেয়েছেন ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট।
মোঃ হাসানুজ্জামান নির্বাচন কর্মকর্তা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা চট্টগ্রামের সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন বুধবার রাতে নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ামে।
৭৩৫ টি সর্বোমেট কেন্দ্র রয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে।এই কেন্দ্র গুলোর মধ্যে ২ বার ভোট গ্রহণ বন্ধ করা হয়েছে ঝামেলা হওয়ার কারণে।
ভোট হওয়ার সময় দুই পক্ষের ঝামেলার সময় এক জন গুলিতে নিহত হয়।এছাড়া নিহত হয়েছে ভাইয়ের ছুরি আঘাতে ভাই। অন্য সজল স্থানে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টাধাওয়া হয়।এই ভোট চলে সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ফল ঘোষণা করেন নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেশিয়ামে ভোটের বেসরকারি ভাবে।ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর সেই ফলাফল গণনা করে কেন্দ্র ফল প্রকাশ করা হয় এর পর সেই ফল নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আসে।
ভোটে সহিংসতা
গত বছরের ২৯ মার্চ পঞ্চম নির্বাচিত পরিষদের মেয়াদ শেষ হয়( চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন) এর পর ভোট গ্রহণের জন্য সকল কিছু সম্পূর্ণ হয়।কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে নির্বাচন স্থগিত করা হয়।পরে ভোটের জন্য বুধবার দিন ঠিক করা হয়।
বুধবার সকল থেকে ভালো ভাবে ভোট গ্রহণ চলছিল এর পরে সকাল ১০ টার দিকে শুরু হয় সংঘর্ষ খুলশী ইউসেপ স্কুল কেন্দ্রে।ঐ সংর্ঘষের মধ্যে নিহত হয় আলাউদ্দিন আলো (২৮) গোলি বৃদ্ধ হয়ে।এই মৃত্যু কথা টা নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. জহির।
অন্যদিকে আপন ভায়ের কাছে ভাই নিহত হয়েছেনগরীর ১২ নম্বর পাহাড়তলী ওয়ার্ডের( বার কোয়ার্টার এলাকায়)। নিতহ হওয়ার ব্যক্তি কর্মী হিসাবে প্রকাশ হয় আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী সাবের আহমেদের।তার ভাই( সালাউদ্দিন কামরুল)ছিল আওয়ামী লীগ পদপ্রার্থী কাউন্সিলর নুরুল আমিনের কর্মী( একই ওয়ার্ড)
বেশ কিছু দিন ধরে নির্বাচন নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে ঝামেলা চলছিল।পরে নওর্বাচন শুরু হলে বুধবার সকলে নিজ ভাইকে ছুরি আঘাত করে পালিয়ে যায় কামরুল।তবে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে নাকি পারিবারিক বিরোধের কারণে হয়েছে এই ঘটনা এটা এখনো নিশ্চিত হয় নি।
অন্য দিকে আটক করেছেন পুলিশ বিএনপির কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোহাম্মদ ইসমাইল বালীকে।জানা যায় তাকে আটক করা হয়পাথরঘাটা মহিলা কলেজ কেন্দ্রে নির্বাচনি কর্মকর্তা আহতের কারণে।
এছাড়া ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা কয়েকটি ওয়ার্ডের কেন্দ্র সংঘর্ষের কারণে।লালখান বাজার এলাকাতেও সংঘর্ষের ঘটনায় আতহ হয়েছে ২০ জন(১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে)
বহদ্দারহাট এখলাছুর রহমান প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী(মেয়র প্রার্থী) সকাল ৯ টার দিকে।ভোট দেওয়ার পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন,সকল ভোটার উৎসব মুখর পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন।
তিনি এই সময় আরো বলেন,জনবিচ্ছিন্ন হলো বিএনপি তাই তাই তারা কোন এজেন্ট দিতে পারে নাই।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অনেক চেষ্টা করেছে নির্বাচনকে ভন্ডুল করতে,তবে মোটামুটি ভাবে শান্তিপূর্ণ ভাবে ভোট শেষ হয়েছে।
মেয়রপদে অংশ নিয়েছেন য়ারা নির্বাচনে
আওয়ামী লীগ মনোনীত এম রেজাউল করিম চৌধুরী (নৌকা),(হাতপাখা মার্কা)ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মো. জান্নাতুল ইসলাম, (হাতি মার্কা)স্বতন্ত্র প্রার্থী খোকন চৌধুরী,(চেয়ার মার্কা)ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ।(আম মার্কা) ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবুল মনজুর,(মোমবাতি মার্কা)বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের মাওলানা এমএ মতিন,এবং (ধানের শীষ মার্কা)বিএনপি মনোনীত ডা. শাহাদাত হোসেন।
ভোটের অন্যান্য সকল তথ্য
এই নির্আাচন নিয়ে ৫৭ জন প্রার্থী রয়েছেন ১৪ সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে।নির্বাচন নিয়ে ৪১ ওয়ার্ডের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ৩৯ ওয়ার্ডে।এছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে বাকলিয়া ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ বিনা (১৮ নং ওয়ার্ড)।কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিম মৃত্যুবরণ করার কারণে ঐ ওয়ার্ডে ভোট বন্ধ রাখা হয়( ৩১ নং ওয়ার্ড আলকরণ)
কিন্তু ঐ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং মেয়র পদে ভোট নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আবদুল মান্নানকে চূড়ান্ত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, হোসেন মুরাদ ইন্তেকাল করেন ঐ কারণে(৩৭ নং ওয়ার্ড)
১৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ দেওয়া হয়
১৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পাশাপাশি যে কেন ধরণের অপরাধের বিচারের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের ২০ জন শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ৪১ টি ওয়ার্ড নিয়ে,৯ হাজার পুলিশ আনসার এর সাথে মোতায়েন করা হয় ২৫ প্লাটুন র্যাব,২৫ প্লাটুন বিজিবি,এবং স্ট্রাইকিং ফোর্স সহ ১৮ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সিটি করপোরেশন নির্বাচন ভোট গ্রহণ কারজে নিয়োক্ত ছিলেন ১৬ হাজার ১৬৩ জন কর্মকর্তা।ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিলেন সবাই। তাদের মধ্যে রয়েছে পোলিং কর্মকর্তা ১০ হাজার ২৬৮ জন ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তা পাঁচ হাজার ৯০২ জন।