মোহাম্মদ কেফায়েত উল্লাহ খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি
দুই দফা নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে অবশেষে চার মাস পর বুধবার (০১ সেপ্টেম্বর, ২০২১) মধ্যরাত থেকে দেশের অন্যতম মৎস্য আহরণ কেন্দ্র কাপ্তাই হ্রদে মাছ শিকার শুরু হয়েছে। হ্রদের অন্যান্য অংশের মতো খাগড়াছড়ির মহালছড়ি অংশেও মাছ শিকার শুরু হয়েছে।
হ্রদে মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে বিশাল কর্মযজ্ঞ ও উৎসবে মেতে উঠেছে হ্রদের উপর নির্ভরশীল ২৫ হাজারের বেশি জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, মাছ শিকার বন্ধকালে ওরা সম্পূর্ণ বেকার হয়ে পড়েছিল। করোনা পরিস্থিতির কারণে তাদের জীবনে দুর্ভোগ আরো বেড়ে গিয়েছিল।
এদিকে প্রথমদিনই হ্রদ থেকে ১২৫ টন মাছ আহরণ হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) কর্তৃপক্ষ। আর এতে প্রতি কেজি মাছে সাড়ে সতেরো টাকা হারে প্রায় ২১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে।
বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) রাঙ্গামাটি বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বিপনণ কেন্দ্রগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুসারে প্রায় ১২৫ টন মাছ আহরণ করা হয়েছে ।
তিনি জানান প্রথম দিনে রাঙামাটি, কাপ্তাই, মারিশ্যা ও মহলছড়িসহ চারটি বিপণন কেন্দ্রে প্রায় ২১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। সূত্রে আরো জানা যায়, গত বছর কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণের প্রথমদিনে ১২৮ মে. টন মৎস্য আহরণ করা হয় ; যা থেকে রাজস্ব আদায় হয় প্রায় ২২ লাখ টাকা।
বিএফডিসির ডেপুটি ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম লিখন জানান, গত বছর প্রথম দিনে এ বছরের চেয়ে কিছুটা বেশি মাছ আহরণ করা হলেও এবছর প্রথমদিকে বেশি মাছ আহরণে জেলেদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। কারণ মাছ যাতে বড় হতে পারে এবং সারাবছর মাছ আহরণ যাতে স্বাভাবিক থাকে।
মহালছড়ির স্থানীয় জেলে অংগ্য মারমা বলেন, বৃষ্টি কম হলে হ্রদের মহালছড়ি অংশে পানি থাকেনা।
বৃষ্টি কম হওয়ায় হ্রদে সময়মতো পানি আসেনি। গত কয়দিনে একটু বৃষ্টি হওয়ায় এবং পাহাড়ি ঢল নামায় অনেক এলাকায় পানি হয়েছে। আমরাও মাছ শিকারে নেমেছি। বিলম্ব হলেও মাছ শিকারে নামতে পারায় আমরা এখন খুব খুশি। তবে এখন পর্যন্ত মাছ কমই পাওয়া যাচ্ছে। আশা করি শীঘ্রই আমাদের এলাকায় ভালো পরিমাণে মাছ পাওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, প্রতি বছর ১ মে থেকে তিন মাসের জন্য কাপ্তাই হ্রদ থেকে সব ধরনের মাছ ধরা,বাজারজাতকরণ ও পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় সময় মতো হ্রদের পানি বৃদ্ধি না পাওয়ায় দুই দফায় হ্রদের মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়ে চার মাস করা হয়।
গত কয়দিনের ভারি বর্ষণে মহালছড়ি ও মারিশ্যাসহ হ্রদের বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।